জলধি / কবিতা / আদ্যনাথ ঘোষ এর তিনটি কবিতা
Share:
আদ্যনাথ ঘোষ এর তিনটি কবিতা

মায়াজাল

এই মেঘছায়া ভালোবাসা

মায়াজাল বোনে, পাঁজরের হাড়ে।

 

অথচ কষ্টের রাত

কিছু অপেক্ষার ক্ষণ

ভাঙে আকাশের কোণা।

 

তবু পৃথিবী ঘুমায়

তার চিরচেনা পথে

আমার পৃথিবী আজ শ্রাবণ, নিরুদ্দেশে।


পচন

পচন ধরেছে আজ শস্যের নাভিতে।

 

তাই সবুজ ফসল কাঁদে

নীল পোড়া আকাশের গায়

নির্জলা তৃষ্ণায়।

 

অথচ রুগ্নতা একদিন

বড়োই বিস্ময় ছিল মৃত্তিকার ভ্রুণে-

ঠোঁটে, স্তনে।

দেহের ভিতর রঙ, লীলামন আকাশ

হেঁটেচলা পাখিভোর দিয়ে যেত রোদ।

 

এখন রামধনু রোদ

সেও কিনা আঁধারের কোলে

শূন্য হাতে, উষ্ণ বুকে, জ্বলে জ্বালে ভাঙে।

 

তাই আমার পৃথিবী  আজ

ঝরে পড়ে দুপুরের আগুন শিখায়

আর চোখের কোণায় জল চোখ রেখে

বলে যায়, চুপি চুপি-

আমার শস্যের গোলা তোমারই দান।


উড়ুক্কু মন, ঘৃণা, নোনাজল

উড়ুক্কু লীলামন ভাসে জোয়ারে

ছাইচাপা আগুনের লোভে।

ঢেলে দিলে ডিজিটাল মন, সবুজ জোয়ার, সোনালি স্বপন-

তবুও কী জ্বলে ওঠে আঁশটে গন্ধ, দহন-ক্রন্দন!

 

বিষাদ ভেঙে ভেঙে হয়ে যায় পাথর।

গোপনে কোণা ভাঙে সুখের আকাশ।

লীলাবতী পুষে রাখে গোপন মুক্তা।

শরীরের বোতাম টিপে- নোনাজলে নদী বয়,

ঘোরলাগা আগুনের লোভে।

 

কতো মৃত্তিকা গলে গলে হয়ে ওঠে শিল্প।

কতো আগুনের নগ্ন প্রেমে জমা হয় জল।

কতো কুড়িয়েছি ঘৃণার আগুন-

কতো কতো দীর্ঘশ্বাস জমে গড়ে ওঠে

কবির জ্বালাময়ী পঙক্তি।

 

তাই হৃদয়ের উল্টো পিঠে-

গোপনে গড়ে তোলে আলোর ভেতরে আরও

আলো আঁধারের খেলা।



অলংকরণঃ আশিকুর রহমান প্লাবন