জলধি / গল্প / না বোঝা প্রেমের ভাষা
Share:
না বোঝা প্রেমের ভাষা

প্যাকিং এজেন্সীর লোকেরা ঘরদোর সাফসুতরো করে গুছিয়ে দিলেও তৃপ্ত হয় না শৌভিক। প্রতি মুহূর্তে মেঘমালার অভাব অনুভব করে। প্রায় কুড়ি বছর পর বাসভূমিতে ফিরে অনেক কিছুই অচেনা লাগে  শৌভিকের। কলকাতার অফিসে জয়েন করে কেটে গেল একটা সপ্তাহ। আজ রবিবার তাই বিকেলে পায়ে পায়ে চারপাশ ঘুরে দেখতে ইচ্ছা হয়। জেলার অন্যতম নামী স্কুল বীনাপাণি বিদ্যা নিকেতনের কৃতী ছাত্র শৌভিক চ্যাটার্জি। বছর তিনেক আগে স্কুলের প্ল্যাটিনাম জুবিলির আমন্ত্রণ পত্র ডাকযোগে  পৌঁছেছিল  দিল্লীর সরকারী আবাসনের ফ্ল্যাটে। পুরোন বন্ধুরা অনেকেই আসছে শুনে খুব ইচ্ছে হয়েছিল অনুষ্ঠানে আসার, কিন্তু চাকরী বড় বালাই। কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য ও পরিসংখ্যান দপ্তরের ঊচ্চ পদাধিকারী শৌভিকের আসা হয়ে ওঠেনি। উৎসব কমিটির নামে অ্যাকাউন্ট-পেয়ি চেকটা পাঠিয়েছিল। পঁচাত্তর  অতিক্রম করা বীনাপাণি বিদ্যা নিকেতন খুব দেখার ইচ্ছে হয় শৌভিকের! বাড়ি থেকে বেরিয়ে শৌভিক চলে আসে জীবনের প্রথম শিক্ষাঙ্গণে। বন্ধ গেটের বাইরে থেকেই দু চোখ  ভরে দেখতে থাকে। প্রাইমারীর পাঠ শেষ করে হায়ার সেকেন্ডারী পর্যন্ত শৌভিকের অতিবাহিত হয়েছে এখানে। ভালো মন্দ কত স্মৃতি। সকালে গার্লস সেকশনের ছুটির ঘন্টা বাজলেই বাড়ি থেকে স্কুলে রওনা দিত শৌভিক। মায়ের নির্দেশ ছিল তেমনি। বাড়ি থেকে ধীরে সুস্থে গেলেও আড়াই তিন মিনিট। উঁচু ক্লাশে ওঠার পর সহপাঠীরা মেয়েদের ছুটির আগেই পৌঁছে যেত। কিশোরবেলার চোখাচোখি ইশারা ইঙ্গিত মুখ টিপে হাসি; না এসব উপভোগ করার সুযোগ হয়নি শৌভিকের। দোতলার বীনাপাণি বিদ্যা নিকেতন চারতলা হয়েছে। বদলে গিয়েছে অনেক কিছু। মাঠটা কত ছোট হয়ে গিয়েছে! মাঝখানের বাঁধানো মঞ্চটা নেই। এক দিকে সাইকেল স্ট্যান্ড।     

-শুনলাম ট্রান্সফার নিয়ে পাকাপাকি ভাবে চলে এসেছো। পিছনে ঘাড় ঘুরিয়ে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে যায় শৌভিক। খুব যে চেনা লাগছে তেমন নয়। অস্বস্তি বাড়তে থাকে শৌভিকের।                           

-শৌভিক দা আমি চিত্রক, তোমাদের আদরের চিতু। চিত্রক গুহ। তোমার দু বছরের জুনিয়ার। আটশ মিটার রেসে বরাবর ফার্স্ট হতাম। স্কুলের অ্যানুয়াল ফাংশানে নাটক করেছিলাম! আমি জয়সিংহ তুমি রঘুপতি! আশাকরি এবার চিনতে পেরেছ?  

স্মৃতির ভেলায় ভাসতে থাকে শৌভিক। স্কুলের অনুষ্ঠানে নিয়মিত আবৃত্তি করেছে শৌভিক কিন্তু নাটক সেই একবারই। বাংলার শিক্ষক প্রবুদ্ধ বাবুর মুখ ভেসে আসে শৌভিকের চোখে “কি সুন্দর গলা তোর শৌভিক। তোকে ছাড়া অন্য কাউকে ভাবতেই পারছি না। তুই রঘুপতি হলে আমি নিশ্চিন্ত হতে পারি শৌভিক”।  

-কিছু মনে পড়ছে শৌভিক দা? প্রবুদ্ধ স্যারকে তুমি বলেছিলে-আবৃত্তি আর নাটক দুটো এক নয় স্যার। আমাকে মার্জনা করুন আমার দ্বারা হবে না। তাছাড়া সামনে হায়ার সেকেন্ডারীর টেস্ট।    

কত বছর আগের কথা কিন্তু মনে হচ্ছে যেন এই তো সেদিন। স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বলেই কি দ্রুত ফিরে আসছে অতীত! চিত্রকের হাতটা নিজের মুঠোয় শক্ত করে ধরে শৌভিক।  

-তুই তো জিনিয়াস ভাই। কি সাংঘাতিক মেমরি!

-ছিঃ দাদা এভাবে লজ্বা দিও না? তোমরা আমাদের স্কুলের গর্ব, আমি তো সেই অর্থে কিছুই না। লাইব্রেরী সায়েন্সে ব্যাচেলার তারপর প্রাইভেটে ইংরেজীতে মাস্টার ডিগ্রীর দৌলতে হরিমোহন কলেজের  লাইব্রেরিয়ান। স্কুলের প্ল্যাটিনাম জুবিলিতে তুমি আসলে খুব ভালো হতো দাদা। তোমাদের ব্যাচের মানিক্য রায় অরিন্দম মুখার্জি এসেছিল। আমি ছিলাম কালচারাল প্রোগ্রামের দায়িত্বে। মানিক্যদা আবৃত্তি করেছিল “আফ্রিকা”। তোমাকে খুব মিস করছিলাম। স্কুলের যে কোন প্রোগ্রামে মানিক্যদা আর তোমার আবৃত্তি শোনার অপেক্ষায় থাকতাম। তোমার কন্ঠে সুকান্ত ভট্টাচার্যর “বোধন” “প্রিয়তমাসু” আজও যেন কানে বাজে। কোথায় যে সব হারিয়ে গেল!

কথায় কথায় দুজনে মিউনিসিপ্যালিটির পার্কের কাছে চলে আসে। পার্কের ভেতরে মায়েদের সাথে কচি কাচাদের ভিড়। কাউকেই চেনেনা শৌভিক, চেনা সম্ভবও নয়। সময়ের সাথে সাথে বদলে গিয়েছে সব। যোগাযোগ না থাকায় আত্মীয় পরিজনেরাই অচেনা হয়ে গিয়েছে পাড়া প্রতিবেশী কোন ছাড়। পার্কের এক কোনে বসে পুরোন স্মৃতির ঝাঁপি খুলে অনেকটা সময় কাটিয়ে দিল শৌভিক আর চিত্রক।

হঠাৎ করে চিত্রকের সাথে দেখা হয়ে যাওয়াটা শৌভিকের যেন এক পরম প্রাপ্তি। ঈশ্বরে বিশ্বাস অবিশ্বাস কোনটাই খুব প্রবল নয় শৌভিকের মনে। অ্যাক্সিডেন্টে মেঘমালা মারা গিয়েছে দু বছর। তারপর থেকেই শৌভিক একেবারে একলা। একমাত্র কন্যা মধুরা ঊচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে। দিল্লীর ফ্ল্যাটে একা থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছিল শৌভিক। চারদিকে মেঘমালার স্মৃতি। অফিস থেকে ফ্ল্যাটে ফিরে নিঃসঙ্গতার যন্ত্রণা। মানু্ষ ভাবে এক হয় আরেক। গুরগাঁওয়ের কমপ্লেক্সের ফ্ল্যাটটা খুব পছন্দ ছিল মেঘমালার। ঠিক ছিল শৌভিক ডিরেক্টর পদে প্রমোশন হলে গুরগাঁওয়ে ফ্ল্যাট কেনা হবে। বাকী জীবন ওখানেই কাটিয়ে দেবে, কিন্তু সে আর হলো কোথায়! প্রমোশন রিফিউজ করে নিজ বাড়িতে ফেরার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে শৌভিক। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। মেঘমালার ব্যবহার্য শখের সামগ্রী ও পোশাক মধুরাকে পাঠিয়ে বাকী যা ছিল সেগুলো এন জি ওর হাতে অর্পণ করে নিজভূমে ফিরে এসে কিছুটা যেন শান্তি পেয়েছে শৌভিক।  

চিত্রকের সাথে আলাপচারিতার পর বাড়ি ফিরতেই স্কুল জীবনের স্মৃতি এসে ভিড় করে শৌভিকের মনে। জীবনে সেই একবারই নাটকের স্টেজে অবতীর্ণ হওয়া। রবীন্দ্রনাথের “বিসর্জন” নাটকের রঘুপতি   চরিত্র। সব সংলাপ মনে নেই যদিও তবুও নিজের অজান্তেই রোমাঞ্চিত হয়ে ওঠে শৌভিক। শরীরের সমস্ত  রোমকূপ খাড়া হয়ে ওঠে। রিহার্সালে একারাশ ভয় তাড়া করে বেড়াত। বাংলার প্রবুদ্ধ স্যারের অভয় বানী -তুই কোন চিন্তা করবি না শৌভিক। নাটকের মঞ্চে শরীরের সাথে সাথে চোখের দৃষ্টি হাত পায়ের  সঠিক ব্যবহার না হলে চরিত্র ফুটে ওঠেনা। কিন্তু সে দায়িত্ব আমার, তোকে আমি ঠিক তৈরী করে নেব। ডায়লগ মুখস্থ করে বাড়িতে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আওরাতে থাকবি, দেখবি ভাব এসে যাবে। টোটকা টা খুব কাজ দিয়েছিল। বাড়িতে ঘরের দরজা বন্ধ করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সমানে প্র্যাক্টিস করেছিল শৌভিক। খুব প্রশংসা হয়েছিল নাটকের। খুশি হয়ে হেড স্যার শৌভিককে রূপোর মেডেল উপহার দিয়েছিলেন। নাটকের কুশীলব এবং অন্যদের জন্য দুই হাড়ি রসগোল্লার মূল্য ধরে দিয়েছিলেন গভর্নিং বডির সেক্রেটারি। সে এক দিন ছিল বটে!

নাটকের বাইরেও অন্য একটা দায়িত্ব ছিল শৌভিকের। জয়সিংহের প্রেমিকা অপর্নার চরিত্রে অভিনয় করেছিল গার্লস সেকশনের অপালা বসু। তখন ক্লাস নাইনে পড়ছে অপালা। ওদের পাড়ায় টিউশন পড়তে যেত  শৌভিক। শৌভিক নম্র ভদ্র, এক কথায় ভালো ছেলে। রিহার্সাল শেষ হলে অপালাকে শৌভিক বাড়িতে পৌঁছে দেবে এই শর্তে অপালার মা ওকে অভিনয়ের জন্য অনুমতি দিয়েছিলেন। ন্যস্ত দায়িত্ব পালন করতে পিছপা হয়নি শৌভিক। অপালাকে বাড়ি্র দরজায় পৌঁছে দিয়েই ফিরে আসতো। কোনদিন পিছনে ফিরে তাকায় নি। একদিন অপালার মা শৌভিককে বাড়ির ভেতরে ঢোকার জন্য বলেছিলেন। অন্যদিন আসব মাসীমা আজ পড়া আছে বলে চলে এসেছিল শৌভিক। নাটক হয়ে যাবার পর অপালাদের বাড়ির পাশ দিয়ে অজস্রবার টিউশন পড়তে গিয়েছে। কতদিন মায়ের সাথে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থেকেছে অপালা। শৌভিকের চোখ সেদিকে যায়নি।

নাটকের প্রসঙ্গটা কেন যে উস্কে দিল চিত্রক। কলকাতার অফিস থেকে বাড়ির দূরত্ব অনেকটাই। গাড়িতে বাড়ি ফে্রার পথে মাঝেমাঝেই শৌভিকের চোখে ভেসে ওঠে বিসর্জন নাটকের দৃশ্যপট।

-একি এ যে রক্ত! এত রক্ত কেন? কেউ কি বলতে পারো এত রক্ত কেন? অপর্নার আর্তনাদ কানে বাজে শৌভিকের। হঠাৎই চিত্রক উদিত হয় জয়সিংহের সাজে –উপায়, কিসের উপায় প্রভু হয় ঠিক! তোমার খড়্গ নাই? রোষে তার বজ্রানল! নাই চন্ডী? তব ইচ্ছা উপায় খুঁজিছে, খুঁজিছে সুরঙ্গ পথ চোরের মতন রসাতল গামী? এ কি পাপ!

উত্তেজিত হয়ে ওঠে শৌভিক -পাপ পুণ্য তুমি কি বা জানো! তবে এস বৎস, আর এক শিক্ষা দিই। পাপ পুণ্য কিছু নাই। কে বা ভ্রাতা কে বা আত্মপর! কে বলিল হত্যাকান্ড পাপ! এ জগৎ মহা হত্যাশালা। জানো না কি প্রত্যেক পলকপাতে লক্ষ কোটি প্রাণী চির আঁখি মুদিতেছে!

-স্যার গাড়ি দাঁড় করাব। ড্রাইভারের কথায় সম্বিত ফেরে শৌভিকের। ব্যাগ থেকে জলের বোতল বের করে কয়েক ঢোক জল খায়। ড্রাইভার গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেয়। মনে মনে নিজেই নিজেকে শাসন করতে থাকে শৌভিক। ফেরার পথে বাকী সময় চোখ বুজে মোবাইলে গান শুনেছে।                          

বাড়ি ফিরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম করেই চিত্রককে ফোন করে শৌভিক –ব্রাদার বিসর্জন নাটকটা আবার করা যায় না?

-কি ব্যাপার দাদা, এত বছর বাদে হঠাৎ বিসর্জন নাটক নিয়ে উৎসাহ! সেদিন মনে করিয়ে দিয়েছিলাম বলেই কি।

-আসলে তুমি সেদিন ....

-শৌভিকদা তুমি কার সাথে কথা বলছো বলতো ?

-কেন চিত্রক! আমাদের চিতু।

-না আসলে তুমি বলে সম্বোধন করছ কি না তাই ভাবলাম ....

-ওহো, সরি ভেরি সরি চিতু। ব্যাপারটা কি জানিস দীর্ঘ কুড়ি বছরেরও বেশি তুই তোকারি করার অভ্যাস নেই তো। হ্যাঁ যেটা বলছিলাম বিসর্জন নাটকটা আবার করলে কেমন হয়!

-করা তো যায়, তবে সমস্যা একটাই চরিত্র অনুযায়ী লোকজন যোগাড় করা। ক্লাবগুলোতে নাটক কালচার প্রায় উঠেই গিয়েছে। আমাদের “সান্ধ্য মজলিশ” এ প্রস্তাবটা দিয়ে দেখি।

-সান্ধ্য মজলিশ! বাহ্‌, নাম টা তো খাসা। তোদের ক্লাব বুঝি।                               

-না সেই অর্থে ক্লাব নয়। জন-কল্যাণ সমিতির কথা তোমার মনে আছে নিশ্চয়ই। ওখানেই পুকুর পাড়ে গাছতলার বাঁধানো চত্বরে অফিস থেকে বাড়ি ফিরে বিশ্রাম তারপর এক দেড় ঘন্টার গুলতানি। শীতের  সময় ফ্যামিলি পিকনিক, বাচ্চাদের স্পোর্টস, পুজোর পরে বিজয়া সন্মিলনী এসব নিয়েই আছি আর কি।

-এতো দারুণ ব্যাপার চিতু! তাহলে দেখ না তোর সান্ধ্য মজলিশের বন্ধুবান্ধব এবং তাঁদের পরিবারের লোকজনকে যুক্ত করা যায় কি না।

-শৌভিকদা তোমার সাধ পূরণের জন্য আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করবো। ফিমেল ক্যারেক্টার তো দুটো, আমার মিসেস কে দিয়ে গুনবতী হয়ে যাবে। অপা ম্যামকে রাজী করাতে পারলে অপর্না নিয়েও আর সমস্যা থাকবে না।

-অপা ম্যাম! তিনি আবার কে?

-আমাদের সাথে স্কুলের নাটকে অপর্নার ভুমিকায় যে অভিনয় করেছিল দাদা। আপালা বসু। সেই অপালা বসুই হচ্ছেন অপা ম্যাম। আমদের স্কুলেই গার্লস সেকশনে বাংলার টিচার।

–তাই বুঝি! জেনে খুব ভালো লাগলোরে চিতু। পড়াশুনায় খুব সিরিয়াস ছিল। এখন থাকে কোথায়?

-কেন বাড়িতে!

-ওর শ্মশুর বাড়ি কাছেই বুঝি?

-অপালা বসু তো বিয়ে করেনি শৌভিক দা।

প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বীনাপাণি বিদ্যানিকেতনে শুরু হলো বিসর্জনের মহড়া। প্রথমে ঠিক ছিল নাটক হল ভাড়া করে হবে। কিন্তু সেটা আর হয়নি। বীনাপাণি বিদ্যা নিকেতনের মাঠে তৈরী স্টেজেই অভিনীত  হলো বিসর্জন। উপচে পড়া ভিড় দেখে আবেগ ধরে রাখতে পারেন নি আনেকেই। মুহুর্মুহ করতালি আর উচ্ছসিত প্রশংসায় মুখরিত বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। নাটক শেষে অভিভূত দর্শকমন্ডলী। বিশিষ্টদের অনেকেই মঞ্চে উঠে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন। সাজঘর থেকে নাটকের কুশীলবেরা মঞ্চে ফিরে এলেন। স্থানীয় জন প্রতিনিধি আবেগে আপ্লুত –বিসর্জন নাটকেই থেমে থাকলে হবে না। আজ থেকেই শুরু হোক  নতুন নাটকের প্রস্তুতি। কথা দিচ্ছি আমার সাহায্য এবং সহযোগিতার অভাব হবে না।

পারস্পরিক শুভেছা বিনিময়ের শেষে এবার ঘরে ফেরার পালা। নাটক শেষ হলে তারপর প্রসঙ্গটা উত্থাপন করবে শৌভিক সেটা আগে থেকেই ভেবে রেখেছিল। মেক আপ মুছে ব্যাগ গুছিয়ে বাইরে বেরিয়ে এসেছে অপালা বসু। এগিয়ে যায় শৌভিক।

–একটা কথা জানার ছিল অপালা।

-কি কথা!

-বিয়ে করলে না কেন?

-যার অপেক্ষায় ছিলাম তাকে যে পেলাম না শৌভিকদা।

-তাই! কে সেই ব্যাক্তি জানতে পারি? অবশ্য যদি তোমার আপত্তি না থাকে।

-যদি বলি তুমি!

-আগে বলো নি কেন?

-অনেকবার চেষ্টা করেছিলাম, তুমি বোঝনি। প্রেমের ভাষা এবং ইঙ্গিত বুঝতে হিম্মত লাগে। দম লাগে শৌভিকদা। তোমার কোনটাই ছিল না।   



অলংকরণঃ আশিকুর রহমান প্লাবন