জলধি / কবিতা / অর্পিতা ঘোষ পালিতের তিনটি কবিতা
Share:
অর্পিতা ঘোষ পালিতের তিনটি কবিতা
লোভের ফল 

 

ভোরের কিচির মিচিরে পাখিদের ডানা 

থেকে আবহাওয়া সংবাদ ভেসে আসে

বিমুগ্ধতায় আপেক্ষিক আর্দ্রতায় 

আকাশের অফুসফুসীয় শরীরে স্নিগ্ধতা 

প্রতিশ্রুতির মুগ্ধবসত স্বল্পমেয়াদ স্তোকেরা নেয় সার্বজনীন

অসহ তাপে পোড়া বাতাস ভিজতে চেয়ে

সব আঁতাত পেরিয়ে আরও গাঢ় হচ্ছে লোভ 

ঠোঁটে লাজুক প্রণয় সাজানো খাঁচার বন্দী পাখি 

বের হয় ঘর ছেড়ে। না জেনেই খোঁজে বৃষ্টি চেনার পথ

তুলির আলাপে মুখময় ঘিরে থাকে আবেগের খেলাঘর

অধিকার ফলাতে মেঘ এসে বলে কথা 

লোভের ফাঁদে পা ফেলে হয় প্রস্তরিভূত

ওর যে নেই দিব্যদৃষ্টি


মুদ্রা
 
আগুন মেখে দাঁড়িয়েছিলে তুমি
শালীন সুগন্ধ চারপাশে
সুরে লেগে আছে ভ্রম
আভরণ পেড়িয়ে মুখোমুখি
মুগ্ধতায় সম্মোহন মনে ও দেহে 
নিষিদ্ধ স্বপ্নেরা ভীষণ জ্বরে
ফোকাস হতে চায় জেগে ওঠা ওম 
অধীর আগ্রহে অলিখিত চুক্তিপত্রে 
মেঘ সরিয়ে বৃষ্টি চেনার পথ 
 
কী পাবে শরীর ছুঁয়ে?
যা কিছু বলার ছিলো ভুলে যাই
বাঁধন আলগা হয়
কতটা নিবেদিত পরে হবে সে সংলাপ 
মুদ্রাকে রাখি অপেক্ষায়
সূর্য ডোবার সময়
আবছা আলোড়নে
ভেসে যায় রংমহলের নৌকা।

বস্তির পঞ্জিকা 
 
গ্লানির আবর্জনায় ভরা বস্তির গলি
ছত্রে ছত্রে দরিদ্র্যতা উপুড়
প্রত্যাশা জিইয়ে কাকভোরে
চৌকাঠ পেরিয়ে বের হয় মদন
চারপাশে জল হাওয়ায় 
বৃক্ষপুরুষ হয়ে ওঠার জন্য খোঁজে গলিঘুঁজি
ঘামের সাথে সামান্য অনুদানে কর্মময় জীবন 
 
রাতের অন্ধকারে উড়ে যায় কাক 
টেপি ঘুম পাড়ায় হাত-পাখা দুলিয়ে ছেলেমেয়ে দুটোকে 
ভাত বাড়ে দু-জনের 
রঞ্জক লেগে বদল হয় চরিত্রের
ঘামে ভেজা মুখে 
ঘিরে থাকে আবেগের খেলাঘর 
গাছে উঁকি মারে জ্যোৎস্না
সময় এসে নেয় শ্বাস 
মহাসাগরের মালিক এখন সে 
ঢেউয়ের পর ঢেউ যায় এগিয়ে 
রেখে যায় প্রাগৈতিহাসিক শীৎকার


অলংকরণঃ তাইফ আদনান