জলধি / কবিতা / অনিরুদ্ধ আলমের টুকরো কবিতা
Share:
অনিরুদ্ধ আলমের টুকরো কবিতা

০১।।  
 

নিতল পাতার মতো করে আজো গুছিয়ে রেখেছ চুল  

কোমল শাখার অবয়বে মেলো তোমার নিদাঘ হাত  

ছায়ার আদলে উজালে আঁচল দারুণ হুলুস্থুল  

তুমি কোনো গাছআলো-ঝড়ে যেন ভালোলাগার প্রপাত!   

  

০২।।  

আজ পাশাপাশি আমরা হাঁটব অনেকটা পথ দূরে  

নদীর বাহারপাখির পালকরোদ্দুরে আনচান - 

ওরাই কেবল জানবে  কথা যাব কি পাহাড়পুরে

সন্ধ্যা নামবে ঘরে ফিরবার ছন্দে উজাবে প্রাণ!  

  

০৩।।

মেঘের মতো হাঘরে আমি এখানে উড়ে এসে  

একটু থামি পাহাড়ি ছবিহৃদয়গ্রাহী খুব  

একটা নদী উছলে ওঠে দুপুর ভালবেসে  

হঠাৎইমেয়েতোমাকে দেখিতোমাতে দিই ডুব   

 

০৪।।

মেয়ে 

কখনো তুমি তো বোঝো নি কবিতা -  

তাই ঢের ভালো আছ  কবির চেয়ে   

  

০৫।।

লাল মোরগের ঝুঁটির আড়ালে দোলে দুরন্ত কাল

মহাশূন্যের কেন্দ্রবিন্দুজুড়ে 

আসন্ন থাকে ঘাত-প্রতিঘাত সময়ের গাঢ় পাল    

সে তো বটপাতা সাগরের বুকে জাল ফেলে কেউ দূরে!   

 

০৬।।   

জলের ভঙ্গুর ঢেউরা পেতে রাখে জলসা ছলোছলো 

নদীর সমতলে কখনো উড়ে-আসা আকাশ হল নিচু  

সহায় গেছে ভেসে আষাঢ় তবু আসে কোথায় আশা বলো

ঝিনুকে পড়ে আছে দুখজ সুখগুলো উড়ালে পেলে কিছু?   

 

০৭।।

যে-কথা বলতে চেয়েও বলি নিহয় নি কখনো বলা –   

মহাবিশ্বের রহস্য কোনো লাউয়ের কুশি লতা?    

ঝিনুক কুড়াতে সাগরের পাড়ে অবিরল পথচলা  

আঁকে শূন্যের দৃঢ় অন্দরে স্বচ্ছল পূর্নতা!   

 

০৮।।

ছবিরা ঘুমিয়ে পড়েছে ঘুমাক জেগে গেলে মুশকিল

কিছু বলছিলে? বলো-না আবার! থেকে গেলে সনাতন

দোরের পাশেই সাগরের নীল আরো কী যে ঝিলমিল

কত দিন পরে পাখি হলে তুমি! হৃদ্য অভিবাদন

 

০৯।।

সাপের মতন ফণা তুলে দিলে হার্দিক বিষ ঢেলে

অথই-কলসি জল করি পান। তৃষ্ণা মেটে না আর

খুব মনে হয় – তোমাকেই দেখি অবিরল চোখ মেলে

নীল বেদনার নেশাতে আমি তো পুড়ে হই ছারখার!

 

১০।।

বাড়ির পাশেই চিরযৌবনা নদীখানা শুয়ে আছে

ওর বুকজুড়ে কত নাও আসে। কত নাও ফিরে যায়

আবার নতুন বসন্ত এল। ফুল ফোটে গাছেগাছে

খোঁজো সবিশেষ কোনো নাও তুমি একান্ত নিরালায়!



অলংকরণঃ তাইফ আদনান